Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wp-user-frontend domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/lawlex.xyz/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃতের সম্পত্তি কি মৃত সন্তানের সন্তানরা পায়? – আইন সমাচার
হোম দেশের আইন মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃতের সম্পত্তি কি মৃত সন্তানের সন্তানরা পায়?
দেশের আইন

মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃতের সম্পত্তি কি মৃত সন্তানের সন্তানরা পায়?

মুসলিম উত্তরাধিকার
শেয়ার করুন

মুসলিম উত্তরাধিকার : এক ব্যক্তির এক ছেলে অনেক পূর্বেই মারা গেছে । কিছুদিন আগে, আমার সেও মারা গেছেন । তার সম্পত্তি নিয়ে এখন ওয়ারিশদের মধ্যে বিবাদ । ঐ ব্যক্তির পূর্বে মৃত সন্তানের ২ কন্যা জীবিত আছে । উক্ত ২ কন্যাকে অপর ওয়ারিশ (জীবিত পুত্র) সম্পত্তির অংশ দিতে রাজী নন। এক্ষেত্রে আইন কি বলে?

সহজভাবে বলতে গেলে একজন মুসলিম ব্যক্তি, হোক সে নারী বা পুরুষ, তার এক পুত্র এবং তার পূর্বে মৃত পুত্রের দুই কন্যা রেখে মারা গেলেন । এমতাবস্থায় উক্ত মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য (রেখে যাওয়া) সম্পত্তি কী অনুপাতে বন্টন হবে? মূল প্রশ্ন হল মৃত ব্যক্তির পূর্বে পুত্রের ২ কন্যা মৃতের সম্পত্তিতে ওয়ারিশ হবে কিনা বা অংশ পাবে কিনা?

১. মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির বিভাগ বন্টণ

মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির বিভাগ বন্টণের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয় ব্যক্তিগত আইন অনুসারে । অর্থাৎ, সংশিষ্ট ব্যক্তি যে ধর্মের অনুসারী সেই ধর্মীয আইনানুসারে বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হবে । মুসলিমদের জন্য মুসলিম উত্তরাধিকার আইন, হিন্দুদের জন্য হিন্দু উত্তরাধিকার আইনানুসারে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির বিভাগ বন্টনের রীতিনীতি পরিচালিত হয় । আমাদের আজকের সমস্যাটি সমাধানে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন প্রয়োজ্য।

২. মুসলিম উত্তরাধিকার বিষয়ে শরীয়া আইন কী বলে?

মুসলিম শরীয়া আইন অনুসারে, মৃত ব্যক্তির পূর্বে মৃত সন্তানের সন্তানরা (এতিম সন্তান) মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে কোন অংশ পাবে না । কারণ, তারা মৃত ব্যক্তির দূরবর্তী উত্তরাধিকার, তার বাবা ছিলেন মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী উত্তরাধিকারী । মৃত ব্যক্তির জীবিত পুত্র কন্যাগণ নিকটবর্তী উত্তরাধিকারী । আর মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের একটি প্রতিষ্ঠিত নীতি হলো- মৃত ব্যক্তির নিকটতম ওয়ারিশগণ দুরবর্তী ওয়ারিশগনকে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে।

৩. মুসলিম উত্তরাধিকার পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে

তবে, ১৯৬১ সালের পর থেকে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৪ ধারা অনুযায়ী উক্ত এতিম কন্যাদ্বয় মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির অংশ পাবে । মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৪ ধারার সারবস্তু এই যে, যার সম্পত্তি বন্টন হবে তার মৃত্যুর পূর্বে তার কোন পুত্র বা কন্যা মারা গেলে এবং উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি বন্টনের সময় তার কোন সন্তানাদি জীবিত থাকলে তার প্রতিনিধিত্বের হারে সম্পত্তির ঔ অংশ প্রাপ্ত হবে যেরুপ অংশ তাদের পিতা বা মাতা জীবিত থাকলে প্রাপ্ত হত ।

এটিকে বলা হয় প্রতিনিধিত্বের নীতি বা Doctrine of Representation। এই নীতিটিকে আরো একটু সহজ করে ব্যাখ্যা করলে দাঁড়ায়- যখন একজন মুসলিম ব্যক্তি (হোক নারী কিংবা পুরুষ) মারা যান এবং তার মারা যাওয়ার পূর্বেই তার কোন ছেলে বা মেয়ে তাদের সন্তান ( ছেলে বা মেয়ে) রেখে মারা গিয়ে থাকে তবে উক্ত পূর্বে মৃত ছেলে বা মেয়ে , প্রপজিটাস ( যার সম্পত্তি ভাগ হচ্ছে) এর ত্যাক্ত সম্পত্তিতে যে হারে অংশ পেত ঠিক একই হারে মৃত সন্তানরা অংশ পাবে । অর্থাৎ, ওই এতিম সন্তানরা তার মৃত বাবা বা মায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে ।

৪. মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে এতিম কন্যা সন্তান কি অংশ পাবে?

এখানে একটি প্রশ্ন হল- যদি এতিম সন্তান একজন কন্যা হয় তাহলে কি সে কন্যা মত করে অংশ পাবে নাকি পুত্রের মত করে অংশ পাবে? আসলে এখানে এতিম সন্তান পুত্র নাকি কন্যা সেটি বিবেচ্য হয় না বরং উক্ত এতিম সন্তানের বাবা নাকি মা মারা গেছে সেটি বিবেচ্য । ধরা যাক, এতিম সন্তান একজন কন্যা সন্তান , তার পিতা মারা গেছে ।

এখানে কন্যা সন্তান যেহেতু পিতার প্রতিনিধিত্ব করছে সেহেতু সে পিতার মত করে অর্থাৎ, প্রপজিটাসের পুত্রের মত করে অংশ পাবে । একইভাবে ধরা যাক, এতিম সন্তান একজন পুত্র সন্তান এবং তার মা মারা গেছে। যেহেতু উক্ত এতিম সন্তান তার মাতার প্রতিনিধিত্ব করছে সেহেতু সে তার মাতার মত করে প্রপজিটাসের ত্যাক্ত সম্পত্তিতে অংশ পাবে । অর্থাৎ, প্রপজিটাসের কন্যা হিসেবে এতিম সন্তান অংশ পাবে ।

সুতরাং মৃত ব্যক্তি ( যার সম্পত্তি ভাগ হচ্ছে) তার পূর্বে মৃত পুত্রের দুই কন্যা তার পুর্বে মৃত পুত্রের মত করেই সম্পত্তি পাবে। অংশ অনুপাতে প্রপজিটাস এর সম্পত্তির সম্পূর্ণ অংশের মধ্যে জীবিত পুত্র ১/২ অংশ এবং মৃত পুত্রের ২ কন্যা ১/২ অংশ ( প্রত্যেকে ১/৪ করে ) সম্পত্তি পাবে ।

৫. উপসংহার

অনেকেই, প্রশ্ন তোলেন এভাবে সম্পত্তি বন্টন মুসলিম আইনের বিরোধিতা কিনা ? আসলে ইসলাম একটি মানবতার ধর্ম। আল্লাহ তালা কোরআনের মধে অস্ংখ্যবার এতিমদের প্রতি সদয় হতে এবং বেশি বেশি দান করতে বলেছেন । এই প্রতিনিধিত্বের নীতি কে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে বাধ্যতামূলক দান বলা হয় । মহানবী (সা.) সারাজীবন এতিমদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে গেছেন । এই এতিমরা চরম দুর্ভোগ এবং দূর্দশার মধ্যে দিয়ে জীবন কাটাবে এটা কি ইসলামের মূল চেতনাকে এবং প্রিয় নবী (সা. ) এর সংগ্রামকে ভূলুন্ঠিত করে।

শেয়ার করুন
লিখেছেন
আইন সমাচার - প্রধান প্রতিবেদক

আইন ও বিচার বিষয়ে এ বাংলা ব্লগ চালু করার উদ্দেশ্য হলো, সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় আইন সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা। আইন ও বিচার সম্পর্কিত যে কোন ধরনের তথ্য, ব্লগ আপডেট সবসময় পাঠকের সামনে তুলে ধরাই আইন সমাচার এর মূল লক্ষ্য। আমরা নিরপেক্ষ তথ্য সরবারহের জন্য সম্পূর্ণই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিনামূল্যে আইন বিষয়ক সমস্যার সমাধান, সেবা, সহায়তা করাও আ্রইন সমাচার এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

মন্তব্য লিখুন

Leave a Reply